
মহাভারতের
এক তেজস্বিনী মেয়ের কথা
সুমনা সাহা
(চতুর্থ পর্ব)
উলুপীর ছেলে ইরাবান বড়ো হচ্ছে। দেখতে সে যেমন
সুন্দর, তেমনই বীর। সুগঠিত দেহসৌষ্ঠবে অপূর্ব এক লাবণ্য। একই অঙ্গে কঠোর পৌরুষের
সঙ্গে নারীসুলভ এক স্নিগ্ধ কোমলতার মিশেল। নাগলোকের নয়নের মণি সে। বাবাকে সে দেখেনি,
মায়ের মুখে শুনেছে তার নানা গৌরবগাথা, আর তাতেই আজন্ম পিতৃদর্শনের তীব্র আকাঙ্ক্ষা তার। উলুপী এখন নাগলোকের
রক্ষাকর্ত্রী, রানি। ছেলের সঙ্গে খুব বেশি
সময় কাটানোর সুযোগ হয় না তার। পিতা বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়েছেন, খুব বেশিদিন হয়তো
আর নাগলোক তাকে ধরে রাখতে পারবে না। তবুও তাদের জাতের মধ্যে নানা জড়িবুটির বিদ্যা-বিশারদ প্রাচীন বৈদ্য
আছেন, তারা রাজার আয়ু দীর্ঘতর করার জন্য সদাই নানা লতাপাতার রস প্রত্যহ তাকে সেবন
করান। রাজার পুত্র, অর্থাৎ উলুপীর ভাইটি বয়সে অনেকটাই ছোটো, স্বভাবেও চপল, দিদির মতো
স্থিতধী নয় সে, বরং কিছুটা রগচটা। আর ইরাবানকে সে মোটেই সহ্য করতে পারে না। কারণ
সে অর্জুনের সন্তান। ওই দুরাচারি দুষ্ট ব্যক্তিটি কীভাবে তার পরমা সুন্দরী
গুণবতী দিদির মন ভোলালো আর তার গর্ভে সন্তান রেখে দিব্যি অন্তর্ধান করল, এমনকি
সন্তানের মুখ দর্শন করতেও কখনও ফিরে আসবার কথা তার মনেও এল না—এসমস্ত কথা চিন্তা
করলেই তার মাথায় আগুন জ্বলতে থাকে। তাই ইরাবানকে দূর থেকে দেখলেই সে অন্য পথ ধরে।
ইরাবান কিন্তু ভারি
অদ্ভুত ছেলে। তার মনে ঈর্ষার লেশমাত্র নেই। সে আপন মনে ঘুরে বেড়ায় অরণ্যের
স্তব্ধতায়, কথা বলে গাছ, ফুল, পাখি, জলের মাছ সবার সঙ্গে। আর যখন আকাশে কাজল কালো
মেঘ ঘনায়, জলে আর মেঘে মাখামাখি হয়ে কী এক অপূর্ব শোভা ধরে, তার মনের ভিতরটা যেন
কেমন করে ওঠে—সকলের অলক্ষ্যে সে বিভোর হয়ে নাচে। সে যে এত সুন্দর নৃত্য জানে,
সেকথা জানে কেবল বনের গাছ, পাখি আর নদী। রাজকাজের অবসরে শ্রান্ত দেহে একদিন উলুপী
আপন কক্ষে বিশ্রাম করছিল। দূরে গাছগাছালির ফাঁক গলে একটা ঠিন ঠিন আওয়াজ শুনে সে
বাতায়নে গিয়ে দাঁড়াল। বনের ভিতরে তখন সন্ধ্যা নামছে। পাখির কাকলিতে মুখর হয়ে উঠেছে
চারদিক। বনের মাঝে একটা পরিষ্কার জায়গায় ঘুরে ঘুরে তার তরোয়ালটি নৃত্যের ভঙ্গিতে
ঘুরিয়ে নেচে চলেছে ইরাবান। তার এই রূপ উলুপী আগে দেখেনি। নিজের ছেলেকে যেন তার
অচেনা লাগে। তাদের নাগলোকে এমন করে কোনো পুরুষকে নৃত্য করতে তো সে আগে দেখেনি। উলুপীর হঠাৎ মনে
হল, ‘এ আমার কাছে থাকবে না। অনেক দূরে চলে যাবে।’ উলুপী আর পাঁচজন ছিঁচকাঁদুনি মেয়ের মতো না, সে ছেলেকে
‘আমার বাছা’ বলে আগলে আঁচলে বেঁধে রাখারও পক্ষপাতী নয় মোটেই। তবে নাগলোকের পুরুষরা
সাধারণত বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া অন্য লোকে যায় না। যুদ্ধে মিত্রপক্ষ ডাক পাঠালে তাদের
জাতের যুদ্ধবাজ লোকেরা যায় অন্য দেশে যুদ্ধ করতে। যুদ্ধের নানা কৌশলে তারা অতি
পটু। ইরাবানকেও সেসব শেখানো হচ্ছে। যুদ্ধ তো কেবল দৈহিক শক্তিতে জেতা যায় না। তার
জন্য যোগশিক্ষা করতে হয়। শত্রুপক্ষের মতিগতি আঁচ করবার জন্য মানসিক একাগ্রতা
বৃদ্ধির অনুশীলন করানো হয়। যোগবলে দেহের আকার বাড়িয়ে কমিয়ে নেওয়া, দেহকে হালকা করে
জলে কিংবা স্থলে হাওয়ার মতো ভাসিয়ে
দিতে পারা—এইসমস্ত অত্যন্ত গোপনীয় প্রশিক্ষণ তাদের নাগলোকের ছেলেদের দেওয়া হয়। আর
ইরাবানকে তো বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। জলে দীর্ঘক্ষণ ডুব দিয়ে
শ্বাসরোধ করে থাকতে পারা তাদের কাছে কোনো বড়ো ব্যাপার নয়। এইসব কারণে দেশের যুদ্ধবিগ্রহে
নাগলোকের সাহায্যপ্রার্থীর সংখ্যা কম নয়। সেরকম ইরাবানও কোনোদিন যুদ্ধে যেতে পারে ভিন দেশে।
কিন্তু উলুপীর আজকের এই ভাবনা সেরকম নয়। এ একেবারে অন্যরকম একটা ভাবনা, যার উৎস
তার মনের গহীনে ঘুমিয়ে আছে, বা সে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছে স্বেচ্ছায়। তাই ছোটো থেকেই যতবার ইরাবান
প্রশ্ন করেছে, “মা, আমরা বাবার কাছে যেতে পারি না?” ততবার উলুপী তার সন্তানকে বুকে
জড়িয়ে ধরে তার কপালে চুমু খেয়ে বলেছে, “কেন, এখানে তোর ভালো লাগে না? মায়ের কাছে
থাকতে ইচ্ছে করে না বুঝি? বাবার কাছে গেলে কি তুই এত আদর পাবি? এখানে তুই
রাজপুত্র। সকলে কত্ত ভালোবাসে তোকে। সেখানে বাবার আরও কত আদরের জন আছে, তোকে কি
আমার মতো ভালোবাসবে কেউ সেখানে?” তবুও ইরাবানের বন্ধ ঠোঁটের আড়ালে বুকের ভিতর থেকে
ইচ্ছের কুঁড়ি একটার পর একটা ফুটতেই থাকে, “বাবাকে কেমন দেখতে? আমি কি বাবার মতো
দেখতে? আমাকে দেখলে বাবা কি বুকে টেনে নেবেন না? তিনি কেন আর একবারও এলেন না?
আমাকে দেখতে তার কি একটুও ইচ্ছে করে না? নাকি তিনি জানেনই না, আমি তার একটি ছেলে,
তার কাছ থেকে অনেক দূরে বড় হচ্ছি। আমিও তির ছুঁড়তে শিখেছি!” কিন্তু এসব কিছু সে মুখ ফুটে বলে না।
নারী-পুরুষের সম্পর্ক সম্বন্ধে সে এখনও অনভিজ্ঞ। তবুও তার এই বোঝা না বোঝার আলো
আঁধারিতেও মায়ের মনে চাপা দেওয়া একটি অভিমানী মেঘ সে অনুভব করতে পারে। তার মনে হয়,
একবার সে ছুটে গিয়ে বাবার সামনে দাঁড়িয়ে বলে, “বাবা, আমি তোমার সেই ছেলে ইরাবান!
আমার মা নাগলোকের রানি,
উলুপী, যাকে ফেলে তুমি চলে গিয়েছিলে, মনে পড়ে? আমার সঙ্গে একটিবার সেখানে ফিরে
চলো, আমার মা যে রানি,
তাই তো তাকে চোখের জল লুকিয়ে রাখতে হয়। তুমি চলো, তার বুকের মেঘকে বৃষ্টি করে
মুক্তি দিতে একবার চলো!”
মণিপুরে অর্জুন এক বছরের
বেশি বাস করছেন। চিত্রাঙ্গদা নতুন মা হয়েছে। ফুটফুটে ছেলেটি মায়ের কোল থেকে পিটপিট
করে চেয়ে দেখে অর্জুনের দিকে, তার চুল ধরে টানে, পিঠের উপর চড়ে নানা যুদ্ধের
আঘাতের দাগগুলোর উপর দিয়ে যখন হামাগুড়ি দেয়, অর্জুন ভাবে, পৃথিবীতে যুদ্ধের কী
প্রয়োজন? চিরকাল যদি এই শান্তির দিনগুলো ধরে রাখা যেত! অদ্ভুত এক বিষণ্ণতায় সম্পৃক্ত
হয়ে যান তিনি। কিন্তু তিনি কুন্তীপুত্র অর্জুন, এই বিষণ্ণতা তাঁকে ছাড়বে না। কুরুক্ষেত্রের
প্রান্তরে আবার ঘিরে ধরবে তাঁকে স্বজনহানির মানসিক গ্লানির ভার। কৃষ্ণের প্রেরণায়
উজ্জীবিত হবেন তিনি, রক্তাক্ত হবে যুদ্ধভূমি সব্যসাচীর অযুত তীরে। হস্তীনাপুরের
ভবিষ্যৎ ইতিহাস তাঁর ফেরার প্রতীক্ষায় অপেক্ষমাণ। অশ্রুভারে বিস্রস্তা প্রেয়সী
চিত্রাঙ্গদা, অর্জুনের বোধে তাঁর প্রথম সন্তান, আপন ঔরসজাত বভ্রুবাহন, আর তন্বী
মণিপুর নদীটিকে পিছনে ফেলে সামনে এগিয়ে চলেন অর্জুন, চিত্রবাহনকে প্রতিশ্রুতি
দিতেই হল, শীঘ্রই ফিরে আসবার। কারণ অর্জুনের পুত্রকে রাজা দত্তক নেবেন প্রথা-মাফিক আপন রাজ্যের উত্তরাধিকারী
রূপে। মন চায় গৃহসুখের আবেষ্টনীতে ফিরে যেতে, চরণদ্বয় কর্তব্যে স্থির। মহেন্দ্র
পর্বতের কাছে মনে মনে প্রার্থনা করেন বীর পার্থ, “হৃদয় আমার তোমার মতো পাষাণ করো
হে গিরিবর!”
সমুদ্রতীর ধরে চলতে চলতে
ক্রমে অর্জুন পেরিয়ে গেলেন অগস্ত্য তীর্থ, সৌভদ্র তীর্থ, পৌলম তীর্থ, কারন্ধ তীর্থ
ও ভারদ্বাজ তীর্থ। সেইসমস্ত তীর্থের জলভাগে ছিল নানা বিষাক্ত প্রাণী ও কুমীরের বাস। ঋষিরা
ভয়ে স্নান করতে নামতেন না, অর্জুনকেও তাঁরা নিষেধ করলেন। কিন্তু অর্জুনের মনে পড়ে
গেল উলুপীর শিখিয়ে দেওয়া বিশেষ বিদ্যার কথা, যার দ্বারা জলের প্রাণীরা জব্দ হয়। সব তীর্থের
জলাশয়গুলো থেকে কুমীর ও অন্যান্য মাংসখেকো জানোয়ারদের উদ্ধার করে তাদের অন্য
জলাশয়ে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে তপস্বীদের ভয়মুক্ত করলেন অর্জুন। কিন্তু মণিপুর
তাঁকে কেবলই টানছে। এ-সংসারে স্নেহ বড়ো বিষম বস্তু, জ্ঞানীরাও এর হাত থেকে নিস্তার পান না।
পিতৃস্নেহ অর্জুনকে আরও একবার টেনে আনল মণিপুরে।
সেদিন সকাল থেকেই
চিত্রাঙ্গদার মন বলছিল, আজকের দিনটা অন্যরকম। বাতাস যেন আরও উতলা। রৌদ্রের রঙে যেন
কেউ সোনা ঢেলে দিয়েছে। মুগ্ধ পিক কুহু ডেকে ডেকে শ্রবণযন্ত্র বিকল করতে বসেছে।
শিশুর হাতে খেলনা তুলে দিতে গিয়ে কেবলই হাত থেকে পড়ে যাচ্ছে। শিশুও আনমনা হয়ে যেন
কার পদশব্দে চকিত চাহনিতে ইতিউতি খুঁজছে। এমন সময়ে দাসী সংবাদ দিল, সেই শালপ্রাংশু মহাভূজ,
চিত্রাঙ্গদার চিত্তচোর অর্জুনকে নগরীর সীমান্তে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। নিমেষেই
সাজো সাজো রব পড়ে গেল। চিত্রবাহন আনন্দে অধীর হলেন তাঁর জামাতাকে ফিরে আসতে দেখে। ধীর
পদে অর্জুন এসে দাঁড়ালেন মণিপুর রাজের সামনে, “কথা দিয়েছিলাম, আরেকবার আসব। আপনার
হাতে আপন পুত্র ও তার মাতার ভার সঁপে দিয়ে যাব আনুষ্ঠানিকভাবে, তার আয়োজন করুন।
হাতে আমার সময় কম।”
দেখতে দেখতে কয়েকটা দিন
আনন্দানুষ্ঠানে অতিবাহিত হয়ে গেল। পুত্রের নামকরণ আগেই হয়ে গিয়েছিল। এবার সম্পূর্ণ
হল নিঃশর্তে তাকে দান করার পালা। অর্জুন রাজা চিত্রবাহনকে বললেন, “আমার আর স্বীকার
করতে বাধা নেই, আমি হস্তিনাপুরের রাজপুত্র, মধ্যম পাণ্ডব অর্জুন।” সভা শুদ্ধ লোক
বিস্ময়ে অবাক হয়ে চেয়ে থাকল বহু কীর্তির নায়ক কুন্তীপুত্র অর্জুনের দিকে। কেবল
চিত্রাঙ্গদার মুখখানি মলিন হয়ে রইল। অবগুণ্ঠনের আড়ালে কেউ তা দেখতে পেল না। তার
মনে পড়ছিল প্রথম দেখা হওয়ার সেই দিনগুলো, যখন নিতান্ত অসহায় পথিকের মতো মানুষটি
তার হাত ধরে প্রবেশ করেছিল এই রাজসভায়। তার সব সময়ই মনে হত, ইনি সাধারণ কেউ নন। তাঁর কথায়, প্রতিটি
আচরণে যেন কী এক অপূর্ব অসাধারণত্ব ফুটে উঠত, তবুও তিনি যদি আর পাঁচজন সাধারণ
মানুষের একজন হতেন, চিত্রাঙ্গদা বুঝি আজ বেশি খুশি হত। অর্জুন করজোরে রাজাকে
বললেন, “শীঘ্রই আমরা এক রাজসূয় যজ্ঞের আয়োজন করব। আপনাদের নিমন্ত্রণ রইল। কন্যাকে
নিয়ে, বভ্রুকে নিয়ে আপনি অবশ্যই আসবেন। আনুষ্ঠানিক নিমন্ত্রণপত্র পাঠাব। তবে এবার
বিদায় দিন, আসি।” চিত্রাঙ্গদার কাছে গিয়ে একান্তে তাকে বললেন, “আমার বিপদের দিনে
শুশ্রূষা করে আমার জীবন রক্ষা করেছ, তোমার এ ঋণ জীবন থাকতে ভুলব না চিত্রা! কিন্তু
তুমি বীর যোদ্ধা। ওই রূপেই প্রথম তোমাকে দেখেছি। আবার সেই রূপে সাজো, পিতাকে
সাহায্য করো রাজ্যের সুরক্ষায়, বীর অর্জুনের পত্নী বীরাঙ্গনা তুমি, তোমার চোখে জল
মানায় না। চোখ মোছ। আমার বভ্রুকে সাহসী যোদ্ধা হয়ে ওঠায় তালিম দিও। হস্তিনাপুর
আমার অপেক্ষায়। আমার মা, ভাইয়েরা আমার ফেরার দিন গুনছেন। আমাকে তো যেতেই হবে চিত্রা।
বিদায় দাও প্রসন্ন মনে। আবার আমাদের দেখা হবে।”
অর্জুন আবার রওনা হলেন। তাঁর
পিছনে পড়ে রইল কলিঙ্গ। সামনে তাঁর গন্তব্য গোকর্ণ তীর্থ। দক্ষিণ সমুদ্রের উত্তর
তীরবর্তী তীর্থগুলি দর্শন সম্পূর্ণ করে এবার তিনি যাত্রা করেছেন পশ্চিম সমুদ্র তীরবর্তী তীর্থভূমির উদ্দেশে। লক্ষ্য প্রভাস তীর্থ দর্শন করে
মাতুলালয় দ্বারকা গমন ও সেখান থেকে হস্তিনাপুর প্রত্যাবর্তন। এদিকে কৃষ্ণ পেয়ে
গেছেন অর্জুনের আগমন সংবাদ। আনন্দে অধীর হয়ে সখাকে আগেভাগে আপ্যায়ন করতে কৃষ্ণ
ছুটে এলেন প্রভাসে। বহুদিন পরে দুই প্রাণের সখা পরস্পরকে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা
হলেন। কৃষ্ণ জানতেন, এতদিনের ভ্রমণে অর্জুন খুবই ক্লান্ত। তাই দ্বারকা পৌঁছানোর
আগে রৈবতক পাহাড়ের উপর সুন্দর একটি প্রাসাদে কিছুদিন বিশ্রামের ব্যবস্থা করে
রেখেছিলেন। তাঁর নির্দেশ মতো সেখানে সব রকমের বিলাস ব্যসনের আয়োজন করে রাখা
হয়েছিল। কৃষ্ণ অর্জুনকে নিয়ে প্রভাস থেকে সোজা পৌঁছে গেলেন রৈবতক পাহাড়ের শৈল
আবাসে। মনের ইচ্ছে, বন্ধুর কাছ থেকে এতদিনের তীর্থভ্রমণের নানা রোমাঞ্চকর গল্প
শুনবেন। কৃষ্ণের অনুচরেরা সেখানে থাকা-খাওয়া ও নানা মনোরঞ্জনের
আয়োজন করেছেন। দুই বন্ধুতে খুব আনন্দে কাটালেন ক’দিন। রাত্রে শোবার আগে অর্জুন
নানা তীর্থের কথা শোনাতেন কৃষ্ণকে। ওদিকে অর্জুনের অভ্যর্থনায় দ্বারকা নগরীও
সুন্দর করে সাজানোর নির্দেশ দিয়ে রেখেছিলেন কৃষ্ণ। নির্দিষ্ট দিনে তাঁদের দ্বারকায়
নিয়ে যেতে এল সুসজ্জিত রথ। রথে করে তাঁরা চললেন দ্বারকায়। কৃষ্ণ সেখানে রাজা।
কিন্তু তারও আগে তিনি অর্জুনের সখা, ভাই। তাই বললেন, “অতিথিভবনে নয়, তুমি থাকবে
আমারই সঙ্গে, খোদ রাজভবনে।”
(ক্রমশ)
ছবি - আন্তর্জাল
No comments:
Post a Comment