
চেনা সুর অজানা
রহস্য
শ্রীপর্ণা দাস
ব্যানার্জী
প্রায় রোজই ঝিলিক
এই
গানটা
শুনতে
পাচ্ছে, কোথা
থেকে
যেন
ভেসে
আসছে
একটা
সুর – লা
লালা
লালা
লা
লালা
আ
আ……
প্রথম দু’দিন ঝিলিক
কিছু
পাত্তা
দেয়নি, কিন্তু
আজ
নিয়ে
তিন
দিন।
ঠিক
খাবার
টেবিলের
আশেপাশে গেলেই স্পষ্ট শোনা
যায়
সুরটা, কিন্তু
খুব
আস্তে।
ঝিলিক আর ওর মা-বাবা
আমেরিকায়
মুভ
করার
পর
এই
বাড়িটা
ভাড়া
নিয়েছে।
বাড়িটা
একটু পুরোনো,
কিন্তু
খুব
সুন্দর
করে
সংরক্ষিত।
দরজা
দিয়ে
ঢোকার
পর
একটু
সরু
মতন
করিডোর, তার
পাশে
একটা
দরজা, দরজাটা
দিয়ে
নিচে
বেসমেন্টে
যাওয়া
যায়।
করিডোর
পেরিয়ে
হল
ঘর, হল
ঘরের
পাশে
রান্নাঘর।
বাড়িটায় মুভ করার
পর
পর
একে
তো
ঘরে
একগাদা
কাজ, তার
ওপর
মেয়ের
আবদার –
“মা শুনে যাও, একটা
গান
শোনা
যাচ্ছে”। ঝিলিকের মা-বাবা একদমই
কথাটাকে
পাত্তা
দেয়
না।
কিন্তু
ঝিলিক
শুনতে
পাচ্ছে।
ঠিক
কোথা
থেকে
যে
গানটা
আসছে
সেটা
যদিও
ও
ধরতে
পারছে
না।
যখনই
খাবার
টেবিলটার
কাছে
যাচ্ছে
তখনই
বেশি
করে
শোনা
যাচ্ছে।
কিছুদিন কাটে এইভাবে
ওই
বাড়িতে।
এরপর
একদিন
দুপুরবেলা, ঝিলিকের
বাবা
যখন
অফিসে
আর
ঝিলিকের
মা
ঘরের
সব
কাজ
সেরে
নিজের
কিছু
কাজ
করার
জন্য
ল্যাপটপটা
নিয়ে
শোবার
ঘরে
বিছানায়
বসে, ঝিলিক
তখন
রান্নাঘরে
মায়ের
বাসনপত্র
নিয়ে
খেলা
করছে।
সেদিন
কিছু
একটা
কারণে
ঝিলিকের
স্কুল
ছুটি।
ছয়
বছরের
ঝিলিক
বেশ
খেলা
করছে, হঠাৎ
আবার
শুরু
হয়
ওই
গান।
মৃদু
সুরেলা
আওয়াজ
আবার
ভেসে
আসে
ঝিলিকের
কানে।
এমনিতেই
বিদেশে
শব্দের
আক্রমণ
খুবই
কম।
গাড়ি
চললেও
তার
কোনো
শব্দ
নেই।
আশেপাশে
বেশ
একটা
শান্ত
ভাব।
বলা
যায়
নিঝঝুম
দুপুর।
এমন
একটা
দুপুরে
তাই
গানটা
বেশ
ভালোই
পরিষ্কার
শোনা
যাচ্ছে।
সেদিন
ঝিলিক
বুঝল
যে
এটা
কোনো
গান
নয়, একটা
গানের
সুর।
তাও
সেটা
রিং
অ্যারাউন্ড
দা
রোসি-র
সুর।
সুরটা
ফলো
করতে
করতে
ঝিলিক
পৌঁছোয় খাবার টেবিলের পাশে।
এতদিন
ও
লক্ষই
করেনি
যে
টেবিলটার
পাশে
একটা
যে
তাক
আছে, সেটার
পেছনে
একটা
দরজা
মতন
বাক্স
আছে, একটা
ছোট্ট
ছিটকিনি
দিয়ে
সেটা
আটকানো।
তাকটায়
একটা
সুন্দর
মতন
মোমবাতি
রেখেছে
ঝিলিকের
মা।
মোমবাতি
স্ট্যান্ড-এর
পেছন
থেকে
ওই
ছোট্ট
ছিটকিনিটার
দিকে
চোখ
যেতেই
ঝিলিক
একটা
চেয়ারে
উঠে
পড়ে।
মোমবাতিটা
সরিয়ে
রাখে
টেবিলে, ধীরে
ধীরে
ছিটকিনিটা
খুলে
ফেলে।
এবার
সেই
সুরটা
আরও
পরিষ্কার
শোনা
যাচ্ছে।
বোঝা
যাচ্ছে
সুরটা
ওই
ছোট্ট
দরজাটার
পেছন
থেকেই
আসছিল।
ছোট্ট
দরজাটা
খোলার
সঙ্গে
সঙ্গে
ঝিলিক
একদম
অবাক
হয়ে
যায়।
যেন
দরজাটার
ওপারে
একটা
স্বপ্ন
নগরী।
ছোটো
ছোটো
বাড়ি, খুব
ছোটো, সারি
দিয়ে
সাজানো, ঠিক
যেন
ঝুলন
সাজানোর
মতো।
এ কী! আরও একটা
দরজা
দেখা
যাচ্ছে
এই
সাজানো
ঝুলনের
পেছনে, এতে
আর
কোনো
ছিটকিনি
নেই।
ঝিলিক
আঙুলের
টোকা
দিতেই
ওটাও
খুলে
গেল।
এবার
সেই
সুরটা
একদম
পরিষ্কার।
ঝিলিক
দেখল
একটা
সুন্দর
পুতুল
রাখা
ওখানে।
পুতুলটা
অসম্ভব
সুন্দর
দেখতে।
ঝিলিক
এত
সুন্দর
পুতুল
কোনোদিন
দেখেনি।
এই
প্রথমবার
ঝিলিক
প্রথম
দরজাটার
ভেতর
দিয়ে
এগিয়ে
নিয়ে
গেল
ওর
হাতটা, পুতুলটাকে
নেবার
জন্য।
পুরো
ব্যাপারটা
ওর
কাছে
একটা
স্বপ্নের
মতন
মনে
হচ্ছে।
একটা
বাড়ির
দেয়ালের
ভেতরে
এমন
একটা
সুড়ঙ্গ
থাকতে
পারে
ঝিলিক
ভাবতেও
পারেনি।
তাও
আবার
স্বপ্নের
মতো
করে
সাজানো
সেই
সুড়ঙ্গ।
যেন
কেউ
অত্যন্ত
যত্নে
সেটাকে
বানিয়েছে
আর
সাজিয়েছে।
পুতুলটার
হাসি
হাসি
মুখ
যেন
ঝিলিককে
দেখছে, যেন
ওকে
বলছে
আমাকে
বের
করো
এখান
থেকে।
ঝিলিক
হাতটা
বাড়াতেই
অনুভব
করে
যে
সুড়ঙ্গর
ভেতরটা
খুব
ঠান্ডা।
ঝিলিক
হাত
ঢুকিয়ে
সাবধানে
পুতুলটাকে
বের
করে।
ছোট্ট
একটা
মিষ্টি
পুতুল।
পুতুলটা হাতে নিয়ে
ঝিলিক
লাফিয়ে
নামতে
যায়
চেয়ার
থেকে, কিন্তু
চেয়ারটা
সরে
যায়
আর
ঝিলিক
খুব
জোরে
পড়ে
যায়
মাটিতে।
হাত
থেকে
ছিটকে
যায়
পুতুলটা।
হাঁটুতে
ব্যথা
পায়
ঝিলিক।
মা
বলে
ডেকে
ওঠে, কিন্তু
কেউ
আসে না
ওর
ডাকে।
ঝিলিক
লক্ষ
করে
যে
চেয়ারে
ও
উঠেছিল
সেই
চেয়ারটা
নেই
ওখানে।
এখন
সেখানে
অন্য
এক
ধরনের
চেয়ার।
পুতুলটাও
যেখানে
ছিটকে
পড়ে
গেল
সেখানে
এখন
একজন
সুন্দরী
মেয়ে
দাঁড়িয়ে, ঝিলিকের
থেকে
তিন-চার
বছরের
বড়ো।
পুতুলটার
মতোই
মুখখানা
মেয়েটার।
এবার
ঝিলিক
ভয়
পায়, এক
পা
পিছিয়ে
যায়।
চারদিকে
তাকিয়ে
দেখে
এটা
ওর
বাড়ি
হলেও, ওদের
কোনো
জিনিস
এখানে
নেই।
আসবাব, ঘরের
বাকি
জিনিস
সব
অন্য
কারোর।
“তুমি
ভয়
পেও
না
ঝিলিক” – মেয়েটা
এই
প্রথম
কথা
বলে
ওঠে
ইংলিশে।
“তুমি
কে? তুমি
আমার
নাম
জানলে
কী
করে? আমার
মা
কই? এসব
জিনিস
কার?” – ঝিলিক
প্রায়
কাঁদো
কাঁদো
মুখে
অনেকগুলো
প্রশ্ন
করে
যায়।
“আমার
নাম
জোডি।
আমরা
আজ
থেকে
বন্ধু
হতে
পারি।
তুমি
আমার
বন্ধু
হবে? আমি
তোমায়
সব
বলব -”
“আমি তো চিনি
না
তোমায়, আমি
জানি
না
আমি
কোথায়, আমার
মা
কোথায়? আমি
কেন
তোমার
বন্ধু
হতে
যাব?”
“আমার
সাহায্য
ছাড়া
তুমি
তোমার
মায়ের
কাছে
ফিরতে
পারবে
না
ঝিলিক।”
ঝিলিক অবশেষে রাজি
হয়, বলে, “আচ্ছা।”
“তাহলে
এসো
আমরা
কোথাও
বসি।
তোমায়
একটা
গল্প
বলার
আছে -”
ঝিলিক একবার তাকায়
ওই
সুড়ঙ্গর
দিকে।
কেন
যে
ওটা
ও
খুলতে
গেল, কেন
যে
পুতুলটাকে
বের
করতে
গেল।
কী
হতে
চলেছে
ওর
সঙ্গে
কিচ্ছু
বুঝতে
পারছে
না
ঝিলিক।
এমনিতে
ঝিলিক
খুব
সাহসী
মেয়ে, কিছুতে
ভয়
পায়
না।
কিন্তু
এমন
অদ্ভুতভাবে
ওদের
বাড়িটা
বেদখল
হয়ে
যাবে
সেটা
ও
মেনে
নিতে
পারছে
না।
নিজের
মাকেও
কোথাও
দেখতে
পাচ্ছে
না।
মা
বলে
ডাকল,
কিন্তু
মা
এল
না, এটা
কিছুতেই
হতে
পারে
না।
তাহলে
কি
মাকেও
কেউ
আটকে
রেখেছে
এইভাবে?
“এত কিছু
ভেবো
না
ঝিলিক।
তোমার
মাকে
কেউ
আটকে
রাখেনি, আর
তোমাকেও
না।”
আশ্চর্য, ঝিলিক মনে মনে কী ভাবছে
সেটা
মেয়েটা
কী
করে
বুঝল?
“ঝিলিক, মন
দিয়ে
শোনো
আমার
কথা।
তুমি
যে
আমাকে
ওই
সুড়ঙ্গ
থেকে
বের
করেছ, আর
তারপর
তোমার
সঙ্গে
যা
হয়েছে
তুমি
বাইরের
কাউকে
কোনোদিন
জানাবে
না, এটাই
একটা
শর্ত
আমাদের
বন্ধুত্বের,” জোডি
বলে।
ঝিলিক রাজি হয়।
জোডি
জানায়
শর্ত
ভাঙলে
কিন্তু
খুব
বিপদ।
ঝিলিক প্রমিস করে যে ও শর্ত
ভাঙবে
না।
জোডি জিজ্ঞেস করে ঝিলিককে, “তোমার
জন্মদিন
কবে?”
“১৯ জুলাই
২০১৩,” উত্তর
দেয়
ঝিলিক।
জোডি বলে, “তোমার
জন্মের
অনেক
বছর
আগে
১৯৭২
সালে
আমরা
এই
বাড়িতে
ছিলাম।
এই
বাড়ি
আমাদের।
যখন
আমি
ছোটো
ছিলাম
তখন
এই
সুড়ঙ্গ
আমি
আর
আমার
দাদা
মিলে
বানিয়েছিলাম।
এটা
আমাদের
গোপন
জায়গা
ছিল।
এখানে
আমরা
আমাদের
পছন্দের
জিনিস
রাখতাম।
এটার
কথা
আমরা
দু’জন
ছাড়া
আর
কেউ
জানত
না।
আমাদের
ছোটোবেলাটা
এই
বাড়িতে
কেটেছে, পরে
বড়ো
হয়ে
আমরা
যে
যার
মতো
পড়াশুনোর
জন্য
অন্য
অন্য
শহরে
চলে
যাই।
তারপরে
এখানে
আমাদের
মা-বাবা
শুধু
থাকতেন।
আমরা
সব
উৎসব
একসঙ্গে
কাটাতাম।
আমার
বয়েস
যখন
সতেরো
আর
দাদার
উনিশ,
তখন
এক
সমুদ্র
সৈকতে
একটা
জাদুকরের
সঙ্গে
আমাদের
আলাপ
হয়, যিনি
কিনা
অনেক
দেশে
বিদেশে
জাদু
দেখিয়ে
বেড়াতেন।
সেই
জাদুকর
আমাদেরও
অনেক
জাদু
শিখিয়েছিলেন।
আমাদের
বাড়িতেও
আসতেন
মাঝে
মাঝে, অনেক
বছর
ধরে
আমাদের
বন্ধুর
মতো
হয়ে
যান।
উনি
আমাকে
আর
দাদাকে
একটা
করে
লকেট
দিয়েছিলেন, দিয়ে
বলেছিলেন
সেটা
পরে
আমরা
যা
চাইব
তাই
হতে
পারব।
দাদা
কিছু
মাস
পর
লকেটটা
হারিয়েও
ফেলে, কিন্তু
আমার
কাছে
সেটা
থেকে
যায়।
কেটে
যায়
দিন, মাস, বছর।
আমরা
বড়ো
হতে
থাকি।
একদিন
এল
যখন
বাবা-মাকে
হারালাম, তারপর
এক
সময়
দাদাকেও।
আমার
বয়সও
তখন
অনেক।
এক
অদ্ভুত
অসুখ
হল
আমার।
বেশিদিন
বাঁচার
কথা
না, কিন্তু
জীবন
সবাই
চায়, সবাই
বাঁচতে
চায়।
হঠাৎ
মনে
পড়ল
সেই
লকেটের
কথা, ভাবলাম
দেখি
না
যদি
কাজ
হয়।
ভাবামাত্র
লকেটটা
গলায়
পরলাম, চোখ
বন্ধ
করে
চাইলাম
যেন
আমি
পুতুল
হয়ে
যাই
আর
সারা
জীবন
ওই
সুড়ঙ্গে
থেকে
যাই।
ভাবামাত্র
কাজ
হল, জ্ঞান
হারালাম
আমি।
জ্ঞান
যখন
ফিরল
তখন
আমি
একটা
অন্ধকার
জগতে।
বুঝতে
পারলাম
আমি
আমাদের
সেই
ছোটোবেলার
সুড়ঙ্গে।
এটা
এমন
এক
গোপন
জায়গায়
যার
সন্ধান
আজ
অবধি
তুমি
ছাড়া
কেউ
পায়নি।
বছরের
পর
বছর
থাকতে
লাগলাম
ওই
সুড়ঙ্গে।
বন্দি
জীবন
মৃত্যুর
থেকেও
খারাপ।
লকেটের
কাজ
একবারই
হবে, কাজেই
ফেরার
আর
কোনো
পথ
ছিল
না
আমার।
আমি
সুর
করে
করে
গান
গাই
যদি
কেউ
শুনতে
পায়।
বিশ্বাস
করো,
এতদিন
কেউ
শুনতে
পায়নি, একমাত্র
তুমি
পেলে।
আমায়
বন্দি
দশা
থেকে
কিছুক্ষণের
জন্য
হলেও
মুক্তি
দেবার
জন্য
তোমায়
ধন্যবাদ।
আমি
চেয়েছিলাম
পুতুল
হয়ে
সুড়ঙ্গে
থাকতে, আমি
জানতাম
না
সুড়ঙ্গ
থেকে
বেরোলে
আমি
আবার
মানুষ
হব -”
একটানা গল্প শুনতে
শুনতে
ঝিলিক
মন্ত্রমুগ্ধ
হয়ে
গেছিল
প্রায়।
জোডির
জন্য
খারাপ
লাগতে
থাকে
ওর।
“তাহলে
তুমি
আর
ফিরে
যেও
না
ওখানে,” ঝিলিক
বলে।
“আমাকে
তো
ফিরতেই
হবে, আমি
না
ফিরলে
তুমি
তোমার
মা-বাবাকে
পাবে
কী
করে? তুমি
কি
জানো
কেন
তুমি
এখন
তোমার
মা-বাবাকে
দেখতে
পাচ্ছ
না? কারণ
তুমি
এখন
১৯৭২
সালে
আছ, আমাদের
সময়ে
এসে
গেছ।
আর
তুমি
আমাকে
বের
করেছ
বলে
তুমি
ছাড়া
আজকের
দিনে
আর
কেউ
আমাকে
দেখতে
পাবে
না।
এসো,
তোমায়
দেখাই
কেমন
ছিল
১৯৭২
সাল” – জোডি
ঝিলিকের
হাতটা
ধরে, ঘুরে
ঘুরে
দেখায়
বাড়ি
ঘর, জোডির
মা
বাবা
দাদার
সঙ্গেও
আলাপ
হয়
ঝিলিকের।
ঝিলিকের
এখন
কী
ভালো
লাগছে
সবকিছু!
জোডিদের
পরিবারটা
কী
সুন্দর।
জোডির
কিছু
খেলনা
ও
দেখতে
পায়।
এখন
তো
ঝিলিকের
কাছে
ব্যাটারিচালিত
কত
খেলনা, কিন্তু
জোডির
ওরকম
খেলনা
নেই
একটাও।
তখন
হয়তো
ছিল
না।
বাড়িটার
পেছনে
একটা
বড়ো
মাঠ, ওখানে
দোলনা
ঢেঁকি
আছে, এই
জায়গাটাতে
এখন
সুইমিং
পুল
ঝিলিকদের।
ঝিলিক
তুলনা
করতে
থাকে
মনে
মনে
কোনটাতে
মজা
বেশি, পুল
নাকি
দোলনা? তবে
জোডির
সঙ্গে
ওর
দারুণ
সময়
কাটছে।
আর
ওর
মনে
ভয়
নেই।
তবে
অনেকক্ষণ
মাকে
দেখেনি
বলে
মনটা
খারাপ
করতে
থাকে, তাছাড়া
মাও
তো
ঝিলিককে
না
পেয়ে খুঁজবেন।
“আমি এবার
বাড়ি
ফিরতে
চাই,” ঝিলিক
জানায়
জোডিকে।
“তাহলে
এসো
আমায়
আবার
রেখে
দাও
ওই
সুড়ঙ্গে।
আর
দরজাটা
বন্ধ
করে
দিও, তাহলে
হয়তো
তুমি
ফিরে
যাবে
তোমার
সময়ে।
এমন
একটা
গল্প
আমি
ওই
জাদুকরের
কাছে
শুনেছিলাম, আমায়
তো
এর
আগে
কেউ
বের
করেনি
তাই
ঠিক
বলতে
পারব
না -”
“আর যদি না হয়?”
ঝিলিক
কেঁদেই
ফেলে
এবার।
জোডি কাছে এসে ওকে জড়িয়ে
ধরে
বলে, “বোকা
মেয়ে,
আমায়
সুড়ঙ্গে
রাখলেই
আমি
পুতুল
হয়ে
যাব,
এটাই
তো
জাদুর
প্রভাব।
আর
আমি
পুতুল
হলেই
স্বাভাবিক
যে
সময়টাও
পালটে
যাবে।”
“তাহলে
তোমাকে
আর
দেখতে
পাব
না?”
ঝিলিক
এখন
জোডিকেও
চায়।
“তোমার
যখন
যখন
সময়
হবে
সুড়ঙ্গের
দরজা
খুলে
পুতুলটা
বের
করে
নিলেই
আমি
এসে
যাব।
কিন্তু
একটা
মুশকিল, আমি
আমার
কোন
বয়সে
তোমার
কাছে
আসব
সেটা
আমি
নিজেও
জানি
না।
মানুষ
জীবনের
যে
কোনো
একটা
বয়সে
আমি
আসতে
পারি, তুমি
তখন
আমায়
চিনতে
না
পারলেও
আমি
তোমায়
ঠিক
চিনে
নেব।
এখন
তুমি
যাও, তোমার
দেরি
হয়ে
যাচ্ছে -”
“একটা
শেষ
প্রশ্ন
করি?”
ঝিলিক
জিজ্ঞেস
করে।
“প্রশ্ন
করো, কিন্তু
শেষ
প্রশ্ন
এটা
বোলো
না।
আমি
চাইব
তুমি
আবার
এসো
আমার
সঙ্গে
দেখা
করতে।”
“তুমি
কি
ভূত?” একরকম
একটু
ভয়
পেয়ে
ঝিলিক
জিজ্ঞেস
করে।
জোডির কী হাসি, “না
না, আমি
ভূত
কেন
হব? আমি
মরে
যাইনি।
মরে
যেতে
চাই
না
বলেই
তো
লকেটটা
পরলাম
আর
পুতুল
হয়ে
গেলাম।
আচ্ছা
শোনো, আমাদের
কথা
কাউকে
বলবে
না
কিন্তু, চাইলে
মাকে
বাবাকে
বলতে
পারো, কিন্তু
তারা
যেন
কাউকে
না
বলেন।”
ঝিলিক এবার বুঝল
সবটা।
মাথা
নেড়ে
সামনে
তাকাতেই
দেখল, জোডি
গায়েব।
দাঁড়িয়ে
আছে
পুতুলটা। ঝিলিক এগিয়ে
গিয়ে
হাসিমুখে
পুতুলটা
হাতে
নিল, বলল, “টাটা
জোডি, আবার
দেখা
হবে।” তারপর
রেখে
দিল
যেখান
থেকে
তুলেছিল
পুতুলটাকে
সেখানে।
দ্বিতীয়
দরজাটা
বন্ধ
করল, সেই
ঝুলন
মতো
জায়গাটা। এমা, ঝিলিক
জিজ্ঞেস
করতেই
ভুলে
গেছে, এই
ঝুলন
কে
সাজিয়েছিল? পরেরবার
জিজ্ঞেস
করবে
ঠিক
করল।
এবার
প্রথম
দরজাটা
বন্ধ
করে
ছোট্ট
ছিটকিনিটাও
লাগিয়ে
দিল।
টেবিল
থেকে
মোমবাতিটা
নিয়ে
রেখে
দিল
জায়গা মতন, একটু
ভালো
করে
দেখে
নিল
ছোট্ট
দরজা
আর
ছিটকিনিটা
ঢাকা
পড়ল
কিনা।
সব শেষে ঝিলিক
অনুভব
করল
ও
সেই
ওদের
চেয়ারটায়
দাঁড়িয়ে।
সব
কিছু
স্বাভাবিক।
ওদের
জিনিসপত্র
সব
ঠিক
ঠিক
আছে।
কিন্তু
অবাক
ব্যাপার,
ঘড়িতে
এখন
২.১৫
বাজে।
এরকম
একটা
সময়তেই
ও
উঠেছিল
চেয়ারে, ছিটকিনি
খুলেছিল।
তার
মানে
সময়টা
এতক্ষণ
আটকে
ছিল? এটাও
বলতে
হবে
জোডিকে।
তাহলে
তো
খুব
মজা, পরেরবার
আরও
অনেকক্ষণ
থাকতে
পারবে
জোডির
সঙ্গে।
খুব
ভালো
লেগেছে
ওর
জোডিকে।
চেয়ার থেকে নেমে
ঝিলিক
দৌড়ে
যায়
মায়ের
কাছে।
ওর
মনে
হয়
অনেকক্ষণ
মাকে
দেখেনি।
মায়ের
কোলে
মাথা
রেখে
শুয়ে
পড়ে।
কিছুক্ষণ পর ঘুমে
চোখ
বন্ধ
হয়ে
যায়
ঝিলিকের, তাও
বলে, “মা
জানো,
ওই
সুরটা
শুনতে
পাচ্ছিলাম, ওটা
জোডি
গাইছিল।
জোডি
অনেক
বছর
আগে
ছিল
এই
বাড়িতে, ওর
সঙ্গে
দেখা
করে
এলাম -” …ঘুম
চোখে
জড়ানো
জড়ানো
কথায়
কী
বলছে
ঝিলিক
ওর
মা
কিচ্ছু
বুঝতে
পারেননি
সেদিন, ভেবেছিলেন
ঝিলিক
ঘুমিয়ে
ঘুমিয়ে
স্বপ্ন
দেখছে।
কোল
থেকে
মাথাটা
নামিয়ে
বালিশে
ভালো
করে
শুইয়ে
দিয়ে
গায়ে
পাতলা
একটা
চাদর
ঢাকা
দিয়ে, মেয়ের
কপালে
একটা
হামি
দিয়ে
আবার
কাজে
মন
দেন
ঝিলিকের
মা।
এরপর ঝিলিক অনেকবার
দেখা
করেছে
জোডির
সঙ্গে।
কখনও
জোডি
পাঁচ
বছরের
মেয়ে, ঝিলিকের
থেকেও
ছোটো, কখনও
আবার
চল্লিশ
বছরের
লেডি।
জোডির
বিভিন্ন
সময়ের
সঙ্গে
ঝিলিক
পরিচিত
হতে
থাকে।
আর
ঝিলিক
সব
কিছু
লিখে
রাখতে
থাকে
ওর
ডাইরিতে, যেটা
কেউ
জানত
না।
ঝিলিক
জানত।
সেই
ছোটোবেলাতেই
ওর
মাকে
জানিয়েছে, কিন্তু
এই
নিয়ে
ঝিলিক
বা
ওর
মা
কোনো
কথাই
নিজেদের
মধ্যে
বলেনি।
ঝিলিকও
এরপর
আর
কাউকে
কিছু
বলেনি।
ঝিলিকের এখন একুশ
বছর
বয়েস।
জোডির
সমস্ত
ঘটনা
নিয়ে
ঝিলিকের
প্রথম
উপন্যাস
বেরোয় –
“পুতুলের আত্মকথা”, কিন্তু
বইটাতেও
ঝিলিক
আসল
চরিত্রের
নাম
প্রকাশ
করেনি।
----------
ছবি – শুভশ্রী দাস
ম্যাজিক ল্যাম্প 



No comments:
Post a Comment