তেজপাতে তেজ কেন, ঝাল কেন লঙ্কায়
অমিতাভ প্রামাণিক
নোটবই পড়েছ নিশ্চয়। তাহলে তো জেনেই গেছ। কী বললে? পড়নি? তাহলে এখানেই পড়ে নাও।
'পেট কেন কাম্ড়ায়, বল দেখি পার কে ?
বল দেখি ঝাঁজ কেন জোয়ানের আরকে ?
তেজপাতে তেজ কেন ? ঝাল কেন লঙ্কায় ?
নাক কেন ডাকে আর পিলে কেন চমকায় ?'
তেজপাতা, লঙ্কা এসব যে রান্নায় দেওয়া হয়, তা তো জানোই। আমাদের ভারতীয় তথা বাঙালি রান্নায় মশলার ব্যবহার খুব। মশলা রান্নায় নিয়ে আসে সুন্দর স্বাদ আর সুগন্ধ। শুধু তাই নয়, অধিকাংশ মশলাতেই অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট নামে এক ধরণের রাসায়নিক বস্তু থাকে, যা আমাদের শরীরের পক্ষেও উপকারী। সুতরাং মশলাদার খাবার মানেই যে খারাপ, তা ঠিক নয়।
তবে তার চাইতেও বহুলাংশে বড় কথাটা হচ্ছে, যদি বলি আজকের পৃথিবীতে মানুষের সভ্যতা বলতে আমরা যা বুঝি, তা নিরূপণেও মশলার একটা বড় ভূমিকা আছে, তাহলে অবাক হয়ো না। কথাটা খুব অসত্য নয়। আমাদের দেশ মশলার দেশ নামে বহুযুগ ধরে খ্যাত। মশলা কিনতে বিদেশী নাবিকদের আনাগোনা শুরু হয়েছিল বহু শতাব্দী আগে। যে পথে এই বাণিজ্য চলত, তার নামই হয়ে গেছিল স্পাইস রুট। আরব ব্যবসায়ীরা সেই মশলা কিনে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করত ইওরোপে। ইওরোপীয় ব্যবসায়ীরা দেখল অকারণে আরবদের কাছ থেকে মশলা না কিনে তারা যদি সরাসরি ভারতে এসে মশলা কিনে নিয়ে যেতে পারে, তাহলে লাভ অনেক বেশি। ইওরোপীয় অভিযাত্রীদের ভারতে আসার পথ খুঁজে বের করার এটাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। এই উদ্দেশ্যেই কলম্বাস ইন্ডিয়ার খোঁজে বেরিয়ে হাজির হল আমেরিকায়, ভাবল সেটাই বুঝি ইন্ডিয়া। পরবর্তীতে পর্তুগীজ ভাস্কো ডা গামা ও অন্যান্য ইওরোপীয় দেশের মানুষেরা ভারতে আসার পথ বের করে ফেলল। নয় নয় করে আটখানা ইওরোপীয় দেশ ভারতে তাদের উপনিবেশ স্থাপন করেছিল ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে, সবকটার নামই ছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী। এদের মধ্যে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ব্যবসা করতে এসে শাসক হয়ে গেল এ দেশের।
আধুনিক যন্ত্রসভ্যতার শুরু ইওরোপের নবজাগরণ ও শিল্পবিপ্লব দিয়ে, যা সম্ভব হয়েছিল এইসব বিদেশী শাসকদের ভারত থেকে ধনরত্ন, শিল্পের জন্যে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল এমনকি এই উপমহাদেশের মানুষকে ক্রীতদাস হিসাবে জাহাজ ভর্তি করে তুলে নিয়ে গিয়ে রীতিমত শোষণের মাধ্যমে। আমরা যাকে সভ্যতা বলি, তার অনেকখানির মধ্যেই এই ধরণের বহু অসভ্যতা লুকিয়ে আছে।
মশলার কথায় ফিরে আসি। আমাদের রান্নায় নিশ্চয় দেখে থাকবে বিভিন্ন ধরণের মশলার ব্যবহার। জিরে, ধনে, হলুদ, আদা, জোয়ান, রাধুনী, মেথি, কালোজিরে, গোলমরিচ, সর্ষে, মৌরি, তিল, ছোট এলাচ, বড় এলাচ, লবঙ্গ, দারুচিনি, জায়ফল, জয়িত্রী, কাবাবচিনি, জাফরান, কারিপাতা, পুদিনা, ধনেপাতা, কত কী! এবং অবশ্যই তেজপাতা, লঙ্কা।

যদিও নামে তেজপাতা এবং সুকুমার রায় আবোল তাবোলে প্রশ্ন করেছেন তেজপাতে তেজ কেন, তেজ আসলে কিন্তু তেজপাতায় তেমন নয়, বরং লঙ্কায়। তেজপাতার ব্যবহার স্বাদের জন্য ততটা নয়, যতটা তার সুগন্ধের জন্য। অবশ্য মনে রাখতে হবে সমস্ত সুখাদ্যেই স্বাদ এবং গন্ধের সুষম মিশ্রণ থাকলে তবেই তা সুখাদ্য। সর্দি হয়ে নাক বন্ধ থাকার সময় আমাদের গন্ধের বোধ অনেকটা কমে যায় বলে খেয়াল করে দেখবে ঐ সময় খাবারে স্বাদও পাওয়া যায় কম। অত্যন্ত সুস্বাদু খাবারও যদি পরিবেশন করা হয় তোমার চোখ বেঁধে (যাতে দেখেই সেই খাবারের পূর্ব-অভিজ্ঞতা স্মরণ করে তার স্বাদ সম্বন্ধে ধারণা না করতে পারো) আর নাক বন্ধ করে, তুমি তার স্বাদ পাবে অনেক কম। বিশ্বাস না হলে পরখ করে দেখো।
আমাদের পঞ্চেন্দ্রিয় বাইরের পৃথিবীর অনুভূতি সংগ্রহ করে মস্তিষ্কে পাঠায়। চক্ষু দেখে আলো, কর্ণ শোনে শব্দ আর ত্বক পায় স্পর্শের অনুভূতি। আলো, শব্দ আর স্পর্শ বা বল – এরা সব পদার্থ শক্তির বিভিন্ন রূপ। লাইট এনার্জি, সাউন্ড এনার্জি, মেকানিক্যাল এনার্জি নামে এদের সম্বন্ধে আমরা পড়াশুনা করি ফিজিক্স বা পদার্থবিদ্যার বইতে। পক্ষান্তরে নাসিকা শোঁকে গন্ধ, জিহ্বা পায় স্বাদ – এই স্বাদ আর গন্ধ কোনও শক্তি নয়, এদের অনুভূতি আমরা পাই নাকের অভ্যন্তরে ও জিভের ওপরে অনুভূতি-গ্রাহক বিশেষ স্নায়ুকোষের দ্বারা, যাদের বলা হয় রিসেপটার সেল, যেগুলো স্বাদু বা গন্ধময় যৌগের অণুগুলোকে চিহ্নিত করতে পারে। চোখ-কান-ত্বক তাই বহন করে ফিজিক্যাল সেন্স বা পদার্থিক অনুভূতি আর নাক-জিভ বহন করে কেমিক্যাল সেন্স বা রাসায়নিক অনুভূতি।
তার মানে তেজপাতায় আছে বিশেষ গন্ধবহ যৌগ, আর লঙ্কায় আছে বিশেষ স্বাদময় যৌগ। আমরা সেগুলো নিয়ে কিছু আলোচনা করব এখানে।
যে কোন বস্তুকে গন্ধযুক্ত হতে গেলে তাতে এমন যৌগ থাকতে হবে, যা উদ্বায়ী অর্থাৎ বাতাসে মিশে যেতে পারে। বাতাসে ভেসে নাকের মধ্যে ঢুকলে তবেই না আমরা গন্ধ পাবো! আয়নিক যৌগ যারা জলে চট করে গুলে যায়, যেমন নুন, তাদের গন্ধ নেই, কেননা আয়নিক যৌগ সাধারণভাবে উদ্বায়ী হয় না। আবার আয়নিক যৌগ নয়, যেমন চিনি, তারও গন্ধ নেই, কেননা তার অণুগুলো বেশ বড় সাইজের। তার মানে গন্ধ আছে সাধারণভাবে সেই সব পদার্থের যারা আয়নিক নয়, আর যাদের অণুর সাইজ ছোট অর্থাৎ আণবিক ভর কম। আয়নিক না হওয়ার দরুন তাদের অণুগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আকর্ষণ কম, তাই চট করে উবে যেতে পারে। আর ছোট হলেই না হাওয়ায় উড়ে বেড়াবে।
সমস্ত মশলাপাতির এই যে গন্ধ, এর মূলে আছে এই রকম ছোট ছোট অণু-ওয়ালা যৌগ। আর শুধু মশলাপাতিতেই নাকি, গন্ধওয়ালা সমস্ত ফুলেও তাই। কেবলমাত্র সুগন্ধি জিনিসেই নয়, বদ্গন্ধী সমস্ত জিনিসেও এই একই ব্যাপার। তোমরা যে আতর বা পারফিউম মাখো, তার মধ্যে থাকে এই রকম যৌগ। জানোই তো ভাল পারফিউমের কী রকম দাম। এই বিদ্যা যদি ভাল করে শিখে নাও, পারফিউমার হওয়া কে ঠেকাবে তোমায়?
বদ্গন্ধী জিনিস নিয়ে আমরা আলোচনা করব না, সুগন্ধী সমস্ত ফুল বা মশলাপাতিতে থাকে বহু এ রকম যৌগের মিশ্রণ। আয়নিক জিনিস যেমন জলে চট করে গুলে যায়, এরা জলে গোলে না। বস্তুত এদের প্রকৃতিই হচ্ছে তেলের মতন। সুগন্ধি অর্থাৎ এসেন্স বহন করে বলে একত্রে এই সব যৌগকে বলা হয় এসেন্সিয়াল অয়েল।
তেজপাতা, যার ইংরাজী নাম bay leaf, তাকে বিজ্ঞানভিত্তিক নাম হচ্ছে Cinammomum tamala. প্রাণী বা উদ্ভিদের বিজ্ঞানভিত্তিক এই ল্যাটিন নামে, জানোই তো, দুটো অংশ থাকে, জেনাস আর স্পিসিস। তেজপাতার নাম দেখে দুটো কথা মাথায় এসে যাচ্ছে না? জেনাসের সঙ্গে বড় বেশি মিল সিনামন অর্থাৎ দারুচিনির। আসলে দারুচিনি গাছেরও একই জেনাস বা গণ, সিনামোমাম। আর স্পিসিসে বা প্রজাতিতে তমাল কেন? কেননা তেজপাতাকে সংস্কৃতে বলা হয় তমালপত্র, আর এই তেজপাতা পাওয়া যায় সংস্কৃত ভাষার জনক এই ভারতীয় উপমহাদেশ ও তৎসংলগ্ন দেশগুলোতেই। বিরিয়ানির হাঁড়িতে সুগন্ধ আনতে বিছানো হয় তেজপাতার বিছানা, অন্য বহু তরিতরকারিতে তেজপাতা ফোড়ন হিসাবে ব্যবহৃত হয়। বিজ্ঞানীরা ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা করে দেখেছেন ডায়াবিটিস রোগে তেজপাতার উপকারী ভূমিকা আছে।
তেজপাতায় গন্ধবাহী যৌগগুলো কী কী? মূলতঃ তিন ধরণের এই যৌগ। বিটা-ক্যারিওফাইলিন আর ক্যারিওফাইলিন অক্সাইড, লিনালুল এবং ইউজিনল।
বিটা-ক্যারিওফাইলিন হচ্ছে একটা বাইসাইক্লিক টারপিনয়েড যৌগ, যাতে একটা চার কার্বনওয়ালা রিং আছে, যাকে বলা হয় সাইক্লোবিউটেন, দুটো কার্বন-কার্বন ডাবল বন্ড আছে (অর্থাৎ এটা একটা অসম্পৃক্ত বা আনস্যাচুরেটেড যৌগ) আর সাইক্লোবিউটেন ছাড়াও আর একটা নয় কার্বনওয়ালা রিং আছে, সেটা সাইক্লোবিউটেনের সঙ্গে ফিউজ্ড্ (সেই জন্যেই বাইসাইক্লিক)। যে বন্ড দিয়ে রিং দুটো যুক্ত, সেটা খুলে গেলে এর নাম বদলে হয়ে যায় আলফা-ক্যারিওফাইলিন বা আলফা-হিউমুলিন। ১৯৬৪ সালে নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী ই জে কোরি বিটা-ক্যারিওফাইলিন কৃত্রিমভাবে গবেষণাগারে তৈরি করেন। প্রকৃতিতে শুধু তেজপাতাতেই নয়, দারুচিনি, গোলমরিচ, জোয়ান, লবঙ্গ এমনকি তুলসীপাতাতে বিটা-ক্যারিওফাইলিন পাওয়া যায়। বিটা-ক্যারিওফাইলিনের বড় রিঙে যে ডাবল বন্ড আছে, সেটাতে অক্সিজেন যোগ করে ইপক্সাইড তৈরি করলে তার নাম হয় ক্যারিওফাইলিন অক্সাইড। পুলিশের কুকুররা গন্ধ শুঁকে যে ড্রাগ ধরে, তাতে এই ক্যারিওফাইলিন অক্সাইডের গন্ধেরই খোঁজ করে তারা।
![]() | ![]() | ![]() |
বিটা-ক্যারিওফাইলিন, ক্যারিওফাইলিন অক্সাইড, আলফা-হিউমুলিন, লিনালুল ও ইউজিনল
গোলমরিচের ঝাঁজের কারণ বিটা-ক্যারিওফাইলিন। তেজপাতে তেজ কেন? বিটা-ক্যারিওফাইলিন থাকে বলে।
তেজপাতার গন্ধের প্রধান উৎস লিনালুল আর ইউজিনল। লিনালুল হচ্ছে দশ কার্বনওয়ালা টার্পিন অ্যালকোহল, এতে রিং টিং নেই, বরং দুখানা ডাবল বন্ড আছে। বহু সুগন্ধি পারফিউমে লিনালুল থাকে। তেজপাতা ছাড়াও লিনালুল আছে পুদিনা, দারুচিনি, লেবু জাতীয় ফলে, তুলসীপাতায় এমনকি চায়ে। অনেকের যে পারফিউমে অ্যালার্জি থাকে, তার কারণও অনেক সময় এই লিনালুল। বস্তুত লিনালুল নিজে নয়, হাওয়ায় জারিত হয়ে এ থেকে যে যৌগ তৈরি হয়, সেটাই চর্মরোগের মত অ্যালার্জি সৃষ্টি করে বলে জানা গেছে। লিনালুলের মৃদু জীবাণুনাশক ক্ষমতা আছে। মানবশরীরের এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ই তৈরিতে লিনালুল লাগে। আর ইউজিনল বেশি থাকে লবঙ্গের তেলে। লবঙ্গের যে গন্ধ, তা প্রধানত ইউজিনলের জন্যেই।
তেজপাতার চেয়ে অবশ্য লঙ্কার ব্যাপারটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ, কেননা আমাদের ভারতীয়দের দৈনন্দিন জীবনে রান্না-করা খাবারে লঙ্কা সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মশলা। সোলানেসি ফ্যামিলির অন্তর্গত লঙ্কার জেনাস হচ্ছে ক্যাপসিকাম। ক্যাপসিকাম বা সিমলা মির্চ নামে গোল গোল যে সবজি আমরা খাই, সেটা আর লঙ্কা একই গোত্রের উদ্ভিদ, যদিও এদের প্রজাতি আলাদা। সবুজ বা লাল রঙের কাঁচালঙ্কার প্রজাতিও বহু, তবে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে Capsicum annuum আর Capsicum frutescene. লাল লঙ্কা, যা শুকিয়ে শুকনো লঙ্কা বানানো হয়, তার লাল রঙের পেছনে আছে ক্যাপসান্থিন নামে এক ধরণের যৌগ। আর যে বস্তুটি লঙ্কায় ঝাঁঝালো স্বাদ এনে দেয়, তা হচ্ছে ক্যাপসাইসিন। এর কথা পরে বলছি।
তরকারিতে রঙ আর ঝাঁঝালো স্বাদের বৈচিত্র্য আনতে লঙ্কার জুড়ি নেই। যদিও আমাদের ভারতবর্ষই হচ্ছে লঙ্কা উৎপাদনে সবচেয়ে অগ্রণী, ভারতেই সবচেয়ে বেশি লঙ্কা খাওয়া হয় এবং ভারত থেকেই সবচেয়ে বেশি লঙ্কা রপ্তানিও হয়, লঙ্কার আদি বাসস্থান কিন্তু মেক্সিকো ও দক্ষিণ আমেরিকা। ভারত সমৃদ্ধ ছিল গোলমরিচে, যার স্বাদ পেতে ইওরোপীয়রা ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যে উৎসাহী ছিল। কলম্বাস আমেরিকা আবিস্কার করে লঙ্কার স্বাদ পেলেন, এবং গোলমরিচের মত ঝাঁঝালো স্বাদের জন্যে একেও পেপার নামে অভিহিত করলেন। সম্ভবত পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষদিকে পর্তুগীজ নাবিকেরা লঙ্কা নিয়ে আসে এশিয়ায়, আর তা ছড়িয়ে পড়ে ভারত, চীন ও সন্নিহিত অন্যান্য দেশগুলিতে। এখন অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুর জেলায় ভারতের তিরিশ শতাংশ লঙ্কা উৎপাদিত হয়। ভারতের মোট লঙ্কা রপ্তানির ৭৫% হয় অন্ধ্রপ্রদেশ থেকেই।
লঙ্কায় ঠিক কতটা ঝাল, তা যা ইউনিট বা একক দিয়ে প্রকাশ করা হয়, তার নাম স্কোভিল ঝাঁঝাঙ্ক। উইলবার স্কোভিল নামে এক আমেরিকান ফার্মাসিস্ট এই স্কেল নিরূপণ করেছিলেন। ভদ্রলোক মোটামুটি আমাদের রবি ঠাকুরের সমসাময়িক, তাঁর জন্ম ১৮৬৫ সালে আর মৃত্যু ১৯৪২ সালে। রবীন্দ্রনাথ তাঁর নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত বই ইংরাজী গীতাঞ্জলির কবিতাগুলো যখন ইংরাজীতে অনুবাদ করছিলেন, সেই সময়েই অর্থাৎ ১৯১২ সালে পার্ক-ডেভিস ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানীতে কর্মরত স্কোভিল কোনও বস্তুতে কতখানি ঝাল, সেই নিয়ে গবেষণা করে এই স্কেল প্রকাশ করেন। ব্যাপারটা বেশ সহজ। ঝাল বস্তু – এক্ষেত্রে ধরা যাক শুকনো লঙ্কা – প্রথমে ঠিকঠাক ওজন করে তার ঝাঁঝালো অংশকে অ্যালকোহলে নিষ্কাশিত করা হয়। অ্যালকোহলের সেই ঘন দ্রবণ এরপর বিভিন্ন মাত্রায় তরলিত করা হয় প্রচুর পরিমাণ জলে গুলে। বিভিন্ন মাত্রার এই জলীয় দ্রবণের স্বাদ পরীক্ষা করার জন্য এগুলো দেওয়া হয় স্বাদ-বিশেষজ্ঞদের, অন্তত পাঁচজনকে। তরলের মাত্রা এমনভাবে দেওয়া হয়, যেন সবচেয়ে তরল যেটা, তাতে কোনও স্বাদই প্রায় না থাকে। এরপর ধাপে ধাপে ঘনত্ব বাড়ানো থাকে। সেই পাঁচজন বিশেষজ্ঞের মধ্যে অন্তত তিনজন তাদের কাছে দেওয়া তরলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম ঘনত্বের যে দ্রবণে প্রথম ঝাল স্বাদ পান, সেটাকেই ধরা হয় স্কোভিল ঝাঁঝাঙ্কের নিম্নতম সীমা। এরপর পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন ঝালখাদ্যবস্তুকে এই স্কেলে ফেলা হয়, আর প্রকাশ করা হয় ১০০-র গুণিতকে। একেই বলা হয় স্কোভিল হিট ইউনিট বা এস এইচ ইউ।
![]() |
ভূত জলোকিয়া |
![]() |
ত্রিনিদাদ মরুগা ভাইপার |
![]() |
ক্যারোলিনা রিপার |
বুঝতেই পারছ, যেহেতু এই স্কেল মানুষের ঝালের অনুভূতির ওপর নির্ভরশীল, আর যতই বিশেষজ্ঞ হোক, সবার জিভে ঝাল অনুধাবনের রিসেপটার কোষের সংখ্যা তো আর সমান হয় না, তাই এই স্কেলে যে কোন জিনিষের মাপে বেশ কিছুটা এদিক ওদিক হতেই পারে। স্বাদের ব্যাপারে আর একটা সমস্যা হচ্ছে, কয়েকটা জিনিস পর পর খেলে জিভে তার স্বাদের বোধ প্রশমিত হয়ে যায়। বেশি মিষ্টি খেয়ে অপেক্ষাকৃত কম মিষ্টি খেলে যেমন পরেরটা শুধু কম নয়, তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম মিষ্টি লাগে, ঝালের ব্যাপারেও তাই। তাই স্কোভিল স্কেলে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম পরিমাপ করা সম্ভব নয়। এর চেয়ে অনেক সুচারুভাবে মাপা সম্ভব লঙ্কায় ঝালের জন্যে দায়ী যে যৌগ, সেই ক্যাপসাইসিন (এবং তার মাসতুতো ভাই ডিহাইড্রোক্যাপসাইসিন)-এর পরিমাণ, সেই পদ্ধতির নাম হাই পারফরমেন্স লিকুইড ক্রোমাটোগ্রাফি বা এইচ পি এল সি। এই পদ্ধতিতে এক কেজি শুকনো লঙ্কায় যদি এক মিলিগ্রাম ক্যাপসাইসিন পাওয়া যায়, তবে তাকে বলা হয় এক পি পি এম (পার্টস পার মিলিয়ন) ক্যাপসাইসিন। সাধারণভাবে পি পি এমকে ১৫ দিয়ে গুণ করলে স্কোভিল স্কেলের মানের কাছাকাছি একটা সংখ্যা (এস এইচ ইউ) পাওয়া যায়।
স্কেল যদি জানা থাকে, তবে পৃথিবীর সবচেয়ে ঝাল বস্তুটি কোন লঙ্কা, সে প্রশ্ন ওঠা খুবই স্বাভাবিক। স্কোভিল তার ঝাঁঝাঙ্ক নিরূপণের পর প্রায় এক শতাব্দী এই শ্রেষ্ঠত্বের আসন গ্রহণ করে ছিল এক ভারতীয় লঙ্কা, তার নাম ভুট বা ভূত বা নাগা জলোকিয়া। উত্তর-পূর্ব ভারতের অসম, নাগাল্যান্ড, মণিপুর (এবং বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে) এর চাষ হলেও ভুট শব্দের উৎপত্তি ভুটান থেকে। স্কোভিল স্কেলে এর ঝাঁঝের মাপ এক মিলিয়ন অর্থাৎ দশ লক্ষেরও অধিক। সে তুলনায় অন্ধ্রের গুন্টুরের লঙ্কার ঝাল মাত্র পঞ্চাশ হাজার এস এইচ ইউ।
অবশ্য এই দশকের গোড়ার দিকে ইংল্যান্ডের কিছু চাষী গ্রীনহাউস পদ্ধতিতে লঙ্কার বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে সঙ্করায়ণ ঘটিয়ে এমন লঙ্কা তৈরি করেন, স্কোভিল স্কেলে যার ঝাঁঝ ভূত জলোকিয়াকে ছাড়িয়ে যায়। লিঙ্কনশায়ারের নিক উডস নামের এক লঙ্কাচাষী এইভাবে তৈরি করেন ইনফিনিটি চিলি পেপার নামে এক লঙ্কা, যা ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে দু সপ্তাহের জন্যে গিনেস বুকে সবচেয়ে বেশি ঝাল লঙ্কার মর্যাদা পায়। এর ঝাঁঝ ছিল ১.০৬৭ মিলিয়ন এস এইচ ইউ। উডসের এই সঙ্কর প্রজাতির লঙ্কা তৈরি হয়েছিল পাঁচ বছরের চেষ্টায়। তার মূল লক্ষ্য অবশ্য বেশি ঝাল লঙ্কা বানানো ছিল না। নিজের খেয়ালেই তিনি বিভিন্ন প্রজাতির লঙ্কার মিশ্রণ ঘটাচ্ছিলেন। তারপর ইনফিনিটি চিলির ফলন হলে তিনি এক লঙ্কায় এক কামড় দিয়ে দেখলেন এর স্বাদ মন্দ নয়, ফলের মতই স্বাদ। মুখে দেওয়ার একটু পরে এর ঝাঁঝ গিয়ে লাগল তার জিভে। হঠাৎ জ্বলতে শুরু করল গলা, কথা বন্ধ হয়ে গেল নিকের। শরীর কাঁপতে লাগল থরথর করে, চুপ করে বসে রইলেন খানিকক্ষণ, প্রবল অস্বস্তি সারা শরীরে। বলে দিলেন, কাউকে এই লঙ্কা খাওয়ার দরকার নেই।
অথচ বিন্ডি নামে ইংল্যান্ডের এক রেস্তরাঁয় সেই লঙ্কা দিয়ে বানানো হল দ্য উইডোয়ার নামে এক তরকারি, যাতে কুড়িখানা ইনফিনিটি চিলি দেওয়া হয়েছিল। বলা হল, এটা হচ্ছে দুনিয়ার সবচেয়ে ঝাল তরকারি। তিনশো লোক সেই তরকারি খাওয়ার চ্যালেঞ্জ নিল। প্রথম যিনি সেই ডিশ খেয়ে উঠতে পারলেন, তার নাম ডক্টর আয়ান রথওয়েল। এক ঘন্টা লেগেছিল তার সেই একবাটি তরকারি খেতে, যাতে ছয় মিলিয়ন স্কোভিল স্কেলের ঝাঁঝ ছিল। এই ঝাঁঝ টিয়ার গ্যাসের চেয়েও শক্তিশালী। এটা খেয়ে মিনিট দশেক তিনি চোখে সর্ষের ফুল দেখেছিলেন।
দু সপ্তাহ পরেই অবশ্য নাগা ভাইপার নামে আর এক সঙ্কর লঙ্কা ১.৩৮২ মিলিয়ন স্কোভিল হিট ইউনিট স্কোর করে ইনফিনিটি চিলিকে হটিয়ে গিনেস বুকে জায়গা করে নিল। পরে দেখা গেল, এরা যেহেতু মাত্র বছর পাঁচেকের বর্ণসঙ্কর, এদের দুটো লঙ্কার মধ্যে ঝাঁঝের প্রচুর তারতম্য। বলে বলে কাছাকাছি ঝাঁঝের লঙ্কা এ থেকে পাওয়া এক রকম অসম্ভব। তাই এদের হটিয়ে শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা উঠে এল যার মাথায়, তার নাম ত্রিনিদাদ মরুগা স্করপিয়ন। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের ত্রিনিদাদ ও টবাগো প্রদেশের মরুগা জেলা এর আদিনিবাস। এদের গড় ঝাঁঝ ১.২ মিলিয়ন এস এইচ ইউ, যদিও এক একটা লঙ্কায় ২ মিলিয়ন এস এইচ ইউয়ের বেশি ঝাঁঝও পাওয়া গেছে। তবে একেও হারিয়ে এক নম্বরে এখন ক্যারোলিনা রিপার নামে এক লঙ্কা, তার গড় ঝাঁঝ ১.৫৬৯ মিলিয়ন এস এইচ ইউ।
এই যে প্রবল ঝাল থাকে লঙ্কায়, এর কারণ হচ্ছে এতে থাকে ক্যাপসাইসিন আর তার বিজারিত ফর্মের যৌগ, ডিহাইড্রোক্যাপসাইসিন। এরাই আমাদের মুখমন্ডলের বিভিন্ন রিসেপটার স্নায়ুকোষের ওপর চেপে বসে ওই প্রবল জ্বলুনির অনুভূতি সৃষ্টি করে। এই স্নায়ুকোষগুলো আদতে রয়েছে কিন্তু স্বাদের অনুভূতির জন্য নয়, বরং তাপমাত্রা আর ব্যথার অনুভূতি বোঝার জন্যে। প্রকৃতপক্ষে স্বাদ হচ্ছে পাঁচখানা, মিষ্টি, তেতো, নোনতা, টক আর মাংসের মত ইয়ুমামি স্বাদ, যা সাধারণত পাওয়া যায় চাইনিজ খাবারে যার মধ্যে এম এস জি বা মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট, যার ব্র্যান্ড নাম আজিনামোটো, থাকে। ঝাল এর মধ্যে কোনোটাই নয়। আমরা যদি বেশ গরম খাবার মুখে ভরে দিই, তবে ঐ স্নায়ুকোষগুলোই মস্তিষ্ককে জানায়, এগুলো গরম, খেলে মুখ পুড়ে যাবে, আর ব্যথাও হবে খুব। ক্যাপসাইসিন বা তার বিজারিত ফর্মের যৌগটি তাপমাত্রা না বাড়িয়েই এই জ্বলুনির অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই অনুভূতি কিন্তু ধীরে ধীরে সহ্য হয়ে যায়। কিছুটা লঙ্কা খেয়ে সহ্য করে নিলে পরের বার লঙ্কা খেলে অতটা ঝাল লাগে না। তার কারণ, এই স্নায়ুকোষগুলো ততক্ষণে ক্যাপসাইসিনকে খানিকটা ‘চিনে ফেলেছে’ – এ তো গরম কিছু নয় – তারা আর বুদ্ধু বনতে রাজি নয়। তাই ক্যাপসাইসিন থেকে তাদের ভয় পাওয়ার অতটা কিছু নেই। ব্যথার অনুভূতিও কম হতে থাকে। এই পর্যবেক্ষণকে – যাকে বলা হয় ডিসেন্সিটাইজেশন – কাজে লাগিয়েই ক্যাপসাইসিনকে ব্যথা প্রশমনের ওষুধ, বিশেষ করে আর্থ্রাইটিক পেইনের (হাড়ের জোড়ের ব্যথা) ওষুধ হিসাবে কাজে লাগানো হচ্ছে। মুখের মধ্যে যে স্নায়ুকোষগুলো থাকে, শরীরের অন্যান্য অংশেও তারা থাকে বিভিন্ন মাত্রায়। সেই জন্যে চোখে ক্যাপসাইসিন লাগলে প্রবল জ্বলুনি হয়, আর তার জন্যে পেপার স্প্রে, যা হচ্ছে ঘন ক্যাপসাইসিনের দ্রবণ, দুষ্ট লোকদের দূরে সরিয়ে রাখতে কার্যকরী।
লঙ্কায় যেমন থাকে ক্যাপসাইসিন, গোলমরিচের ঝাঁঝের জন্যে দায়ী তেমনি পিপারিন, আর সর্ষের তেলে ঝাঁঝ থাকে এর মধ্যে অ্যালাইল আইসোসায়ানেট নামের যৌগ থাকে বলে। এরা যেমন মুখের মধ্যে (বা শরীরের অন্যত্রও) উচ্চ তাপমাত্রার অনুভূতি সৃষ্টি করে, তেমনি পুদিনা বা মিন্টের মধ্যে থাকা মেন্থল করে ঠিক এর উল্টোটা, অর্থাৎ ঠান্ডার অনুভূতি সৃষ্টি করে। শরবতে ব্যবহার করা হয় মেন্থলের। মাথাব্যথার মলমের মধ্যেও থাকে মেন্থল।
![]() | ![]() | ![]() |
পিপারিন,অ্যালাইল আইসোসায়ানেট ও মেন্থল
ঝালের গল্প তো শুনলে। বলো দেখি ভুল করে খুব ঝাল কাঁচালঙ্কা চিবিয়ে ফেললে যদি ভয়ানক জ্বালা করতে শুরু করে, যেমন হয়েছিল নিক উডসের বা ডক্টর রথওয়েলের, তখন কী করবে তোমরা? জল খাবে? উঁহু, তাতে কাজ হবে না। মিষ্টি খাবে? না, তাতেও ফল হবে না। মিষ্টি দিয়ে তেতো স্বাদ প্রশমিত হতে পারে, ঝাল নয়, কেননা ঝালের ব্যাপারটা, যা বললাম, একেবারেই অন্য। ঝাল তো কোনও স্বাদ নয়। আর ঝালের কারণ যে ক্যাপসাইসিন বা ডিহাইড্রোক্যাপসাইসিন, এরা দুজনেই জলে একেবারে গোলে না। তাই জল দিয়ে একে ধুয়ে ফেলা যায় না। এরা গোলে ফ্যাট বা তেলে। শুধু তেল তো খাওয়ার জিনিস নয়। তাই ঝাল প্রশমিত করার ওষুধ হচ্ছে দুধ। দুধের মধ্যে যে ফ্যাট থাকে, তাতে ক্যাপসাইসিন গুলে যায় আর জিভের রিসেপটার সেলে তার ঘনত্ব কম হয়ে গিয়ে ঝালের অনুভূতি হ্রাস করে দেয়। ভয়ানক ঝাল লাগলে সুতরাং ঢকঢক করে কুলকুচি করে নাও ঠান্ডা দুধ দিয়ে, অনেকটা আরাম পাবে।
এই নোটবুক এখানেই বন্ধ করি তবে। ওহো, পরের লাইনেই তো প্রশ্ন ছিল, নাক কেন ডাকে আর পিলে কেন চমকায়? তার উত্তর বের করো দেখি তোমরা নিজে নিজেই।
_______
Superb treatise.
ReplyDeleteদুর্দান্ত - দুর্দান্ত!!! প্রথম থেকে শেষ এক্কেবারে জমজমাট! আর ঝালের টোটকাটা দারুন!! মনে রাখবো!
ReplyDeleteপ্রসঙ্গত মনে পড়ল - একজন ক'দিন আগে লিখেছিলেন যে পাহাড়ী রাস্তায় গাড়ী করে গেলে যে বমি বমি ভাব (মানে যাকে মোশন সিকনেস বলে) সেটা কাটাতে নাকি লঙ্কায় কামড় দেওয়া খুব কার্যকরী! এটার কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কি আছে?
ইতি তনুশ্রী
তা তো শুনিনি। তবে আমার ব্যক্তিগত ধারণা, মোশন সিকনেসের অনেকটাই মোশনের প্রতি অত্যধিক অ্যাটেনশন দেওয়ার জন্যে। ঢালু দিকে গড়িয়ে পড়ে যাবার আতঙ্ক, অত্যধিক বাঁক নেবার ঝাঁকুনি, সরু রাস্তায় অন্য গাড়িকে বিশেষ করে খাদের দিক দিয়ে পাশ কাটানোর আতঙ্ক - সব মিলেমিশে এই ভাব। সাধারণভাবে সামনের দিকে তাকিয়ে থাকলে, কথাবার্তায় বা গান-বাজনা শুনে মনোযোগ অন্যদিকে সরিয়ে রাখলে এই সিকনেস কমে যায় বলা হয়। তাই ভাবছিলাম এমন হতে পারে যে কাঁচালঙ্কায় কামড় দেওয়ার জন্য জিভে জ্বলুনির দরুন মনোযোগটা ঐদিকে স্থানান্তরিত হয় বলে হয়ত এই পাহাড়ি রাস্তার খাদে গড়িয়ে পড়ার দিকে নজর থাকে না।
DeleteAmitava my best wishes and regards onoboddyo lekha VAI
ReplyDeleteThis comment has been removed by the author.
ReplyDeleteদাদা, এই লেখার বিষয়বস্তুর কিছুটা আমার আগে জানা, বাকিটা অজানা ছিল। এবার জানা হল। অসাধারন। এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেললাম।
ReplyDeleteখুব ভালো ঝরঝরে লেখা। তথ্য সমৃদ্ধ ও সুন্দর উপস্থাপনা।
ReplyDeleteEi lekhay comment korar moto gyan baa jogyota konotai amar nei...poRe somrridho holam, purotai ojana chhilo, janlam...er jonyo asheem kritogyota janai Amitave da ke!
ReplyDelete